পিরোজপুর পোষ্ট ডেক্স : আজ শুভ বিজয়া ।টানা পাঁচ দিন মৃন্ময়ীরূপে ম-পে ম-পে থেকে আজ ফিরে যাবেন কৈলাশে স্বামী শিবের সান্নিধ্যে। আসছে বছর আবার হবে মায়ের দর্শন এমন প্রত্যাশা রেখে মাকে বিসর্জন দেব হিন্দু ধর্মালম্বীরা । সনাতন হিন্দু বিশ্বাসে-বোধনে ‘অরুণ আলোর অঞ্জলি নিয়ে আনন্দময়ী মা উমাদেবীর আগমন ঘটে। অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে শুভ ও কল্যাণ এবং সব সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে নিরন্তর শান্তি ও সম্প্রীতির আকাঙ্খা নিয়ে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে আজ সমাপন ঘটবে বাঙালি হিন্দুদের সবচেয়ে বড়ো ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা।
‘যা দেবী সর্বভূতেষু মাতৃরূপেন সংস্থিতা, নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমো নমঃ’ মন্ত্রোচ্চারণের মধ্য দিয়ে দূর কৈলাশ ছেড়ে মা পিতৃগৃহে আসেন ঘোটকে চড়ে। আজ বিজয়া দশমীতে এয়োস্ত্রীদের দেবীবরণ ও সিঁদুর খেলার পর বিদায় নেবেন আবারও ঘোটকে। আজ সকাল থেকেই ম-পে ম-পে ছিল ভক্তদের ঢল। ঢাক আর শঙ্খধ্বনি। টানা মন্ত্রপাঠ। উলুধ্বনি আর অঞ্জলি। সঙ্গে ঢাকের বাদ্য, নাচ, সিঁদুর খেলা। ধান, দূর্বা, মিষ্টি আর আবির দিয়ে দেবীকে বিদায় জানান ভক্তরা।
রাজধানীতে বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদ ও মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির যৌথ উদ্যোগে বিজয়া শোভাযাত্রা শেষে বুড়িগঙ্গা নদীতে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হবে। বিজয়া দশমী উপলক্ষ্যে আজ সরকারি ছুটি। বেতার ও টেলিভিশনে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করা হচ্ছে। সংবাদপত্রগুলো বিশেষ নিবন্ধ ও ক্রোড়পত্র প্রকাশ করবে। বঙ্গভবনসহ গুরুত্বপূর্ণ ভবন আলোকসজ্জিত করা হবে।
এদিকে গতকাল নীলকণ্ঠ, নীল অপরাজিতা ফুল ও যজ্ঞের মাধ্যমে হিন্দুরা নবমী বিহিত পূজা করেন। নবমী পূজায় যজ্ঞের মাধ্যমে দেবী দুর্গার কাছে আহুতি দেওয়া হয়। ১০৮টি বেলপাতা, আম কাঠ, ঘি দিয়ে এই যজ্ঞ করা হয়। সকালে নবমী বিহিত পূজার মধ্য দিয়ে দিনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। পূজা শেষে অঞ্জলি, প্রসাদ বিতরণ এবং সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হয় ভোগ আরতি। শেষবারের মতো ঠাকুর দেখতে ম-পে ম-পে ছিল উপচেপড়া ভিড়। বাসা-বাড়িতে অতিথি আপ্যায়ন করেন হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন।
সনাতন বিশ্বাসে অসুরের বধ আর ধর্ম প্রতিষ্ঠার জন্য প্রতি বছর দুর্গতিনাশিনী দেবী দুর্গা ভক্তদের মাঝে আবির্ভূত হন। শুভ বিজয়ার মাধ্যমে জাগতিক প্রাণীকে শোনান সাম্য ও ভ্রাতৃত্বের বাণী।