মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি : পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় অতিদরিদ্র নারীর মাতৃত্বকালীন ভাতার নাম তালিকাভুক্তি করতে এলাকার দফাদারদের ঘুষ গ্রহণের নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। মাতৃত্বকালীন ভাতার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্তি এলাকার ইউপি সদস্য, সংরক্ষিত মহিলা সদস্যাসহ সংশ্লিষ্টদের ৩০০ থেকে ৫০০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুষ দিতে হয় বলে ভাতাভোগীরা অভিযোগ করেছেন।
মঠবাড়িয়া উপজেলা মহিলা বিষয়ক কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দারিদ্য বিমোচনের লক্ষ্যে দেশে সামাজিক নিরাপত্তার অংশ হিসাবে নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে পরিচালিত মাতৃত্বকালিন ভাতা কমসূচিতে গর্ভাবস্থায় ও সন্তানকে স্তন্যদানকালে দুঃস্থ নারীদের পুষ্টি ও সন্তান লালন পালন জন্য ৩৬ মাস টাকা দেওয়া হয় জন প্রতি মাসিক ৮০০ টাকা হারে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে মঠবাড়িয়া উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের প্রতিটি ইউনিয়ন থেকে ৭৯জন এবং একটি পৌরসভা (ল্যাকটেডিং মাদার) থেকে ৫০জন ৯১৯জন দুঃস্থ অসহায় দরিদ্র নারীকে মাতৃত্বকালিন ভাতা প্রদান করা হয়।
সরকারী নিয়ম অনুযায়ী অসহায় দরিদ্র নারী, ভুমিহীন ও দুই সন্তানের জননীকে ভাতার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার কথা থাকলে টাকার বিনিময়ে অসহায় দরিদ্র ও দুঃস্থ নারীদের বাদ দিয়ে স্বচ্ছল নারীদের নাম ভাতার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করারও অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় বড়মাছুয়া ইউনিয়নের দফাদার আলাউদ্দিনের বিরুদ্ধে।
উপজেলার উত্তর বড়মাছুয়া তারাপাতি গ্রামের অটোচালক মিজান ফকিরের স্ত্রী শিমু বেগম (২৪) জানান, মাতৃত্বকালীন ভাতা পাবার জন্য ব্যাংকে একাউন্ট খোলার কথা বলে স্থানীয় দফাদার আলাউদ্দিন চাচা ৩০০ টাকা নিয়েছে। গত মঙ্গলবার পুণরায় ২০০টাকা নিয়েছে। গত মঙ্গলবার আমার সাথে আরও দুই তিন জন নারীও তালিকায় নাম উঠাতে গেলে দফাদার আমাদের কাছে টাকা দাবি করে। বাধ্য হয়ে তাকে টাকা দিয়েছি। না দিলে তালিকায় সে নাম উঠাবেনা।
একই এলাকার বেপারী বাড়ির দিন মজুর দেলোয়ার ফকির এর স্ত্রী রাজিয়া বেগম (২৫) জানান, মাতৃত্বকালীন টাকা পাইয়ে দেবার জন্য অফিসের খরচের কথা বলে আলাউদ্দিন দফাদার ৩০০ টাকা নিয়েছে আরও ২০০ টাকা দাবী করেন। এভাবে আমাদের এলাকার অনেকের কাছ থেকেই টাকা নিয়েছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত বড়মাছুয়া ইউনিয়নের দফাদার মো. আলাউদ্দিন অফিসের কাগজপত্র প্রস্তুত করার নামে টাকা লাগার কথা মুঠোফোনে স্বীকার করে পরক্ষনেই কারো কাছ থেকে টাকা নেবার কথা অস্বীকার করেন।
বড়মাছুয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. নাসির মিয়া জানান, মাতৃত্বকালীন ভাতার নামের লিষ্ট দফাদার করেন। আমার কাছে আসলে স্বাক্ষর করে দিয়ে দেই। এখানে কারো কাছ থেকে কোন টাকা নেয়া হয়েছে কিনা আমার জানা নেই। তবে কেউ যদি দফাদারের নামে লিখিত অভিযোগ করলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মনিকা আক্তার জানান, গর্ভবতী নারীদের মাতৃত্বকালীন ভাতার জন্য নাম তালিকাভুক্তি করতে কোন টাকা লাগে না। এর পরেও কোন মেম্বর-দফাদার যদি টাকা নিয়ে থাকে লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।