পিরোজপুর পোষ্ট ডেক্স : প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে ১৪টি অনুশাসন সম্বলিত পরিপত্র জারি করেছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। দুর্নীতি বন্ধে দুদকের সুপারিশের পরপরই এই পরিপত্র জারি করা হয় বলে বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. ইফতেখার হোসেন জানান।
তিনি বলেন, পরিপত্রের মাধ্যমে কাজের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে মোট ১৪টি অনুশাসন অনুসরণের জন্য আওতাধীন সংস্থাসমূহকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। অনুশাসনসমূহ হলো-
১) নতুন প্রকল্প অনুমোদনের ক্ষেত্রে যোগ্যতাসম্পন্ন তৃতীয় পক্ষ দ্বারা বিস্তারিত সম্ভাব্যতা সমীক্ষা অর্থাৎ পরিবেশগত, সামাজিক ও কারিগরি প্রভাব এবং অর্থনৈতিক বিশ্লেষণসহ আনুষঙ্গিক কার্যক্রম আবশ্যিকভাবে সম্পন্ন করতে হবে। এ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় দলিলাদি সংযুক্তপূর্বক ডিপিপি মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করতে হবে;
২) স্থাপনা নির্মাণ সংক্রান্ত প্রকল্প সমূহের ক্ষেত্রে কারিগরি পরীক্ষা যেমন: মৃত্তিকা পরীক্ষা, সাইট নির্বাচন সংক্রান্ত তথ্যাদি ডিপিপিতে সংযুক্ত করতে হবে।
৩) বিশেষ কারণ ছাড়া চলমান প্রকল্পের ব্যয়, মেয়াদ বৃদ্ধি, আন্তঃঅঙ্গ সমন্বয় এবং প্রকল্প সংশোধন করা যাবে না। জরুরি প্রয়োজন হলে মন্ত্রণালয়ের একজন দায়িত্ববান কর্মকর্তা কর্তৃক সরেজমিন প্রকল্প এলাকা পরিদর্শনপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
৪) প্রকল্পের ড্রয়িং ও ডিজাইন চূড়ান্ত করে মোট ব্যয় প্রাক্কলনের পর প্রকল্প অনুমোদনের জন্য প্রক্রিয়াকরণ করতে হবে। তার পূর্বে কোনো অবস্থাতেই ডিপিপি মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা যাবে না।
৫) প্রকল্পের আইটেমের পরিমাণ এবং আইটেম অনুযায়ী প্রাক্কলিত ব্যয়ের সঠিকতা ও যথার্থতা সংস্থা প্রধান এবং সংস্থা প্রধান কর্তৃক মনোনীত ঊর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা কর্তৃক যৌথভাবে প্রত্যয়িত হতে হবে। প্রাক্কলনের সাথে রেইট সিডিউল/বাজার মূল্যের অসামাঞ্জস্যতা থাকলে সংস্থা প্রধান কর্তৃক মনোনীত কর্মকর্তা ব্যক্তিগতভাবে দায়ী থাকবেন এবং তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে।
৬) ভেরিয়েশন, পুনঃকার্যাদেশ, অতিরিক্ত কার্যাদেশসহ এ ধরনের সকল কার্যক্রম নিরুৎসাহিত করতে হবে। ক্ষেত্র বিশেষে যৌক্তিক কারণে গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের ভেরিয়েশন, পুনঃকার্যাদেশ, অতিরিক্ত কার্যাদেশ প্রদানের ক্ষেত্রে পিপিআর ৭৭, ৭৮, ৭৯ ধারা যথাযথভাবে প্রতিপালন করতে হবে এবং এ সংশ্লিষ্ট প্রস্তাবে প্রত্যয়ন সংযুক্ত থাকা বাধ্যতামূলক।
৭) বিদ্যমান বিধি-বিধান অনুসারে গঠিত অধিদপ্তর/সংস্থার পণ্য সংশ্লিষ্ট সেবা, কার্য ক্রয় সংক্রান্ত কারিগরি মূল্যায়ন কমিটি নিয়মিতভাবে পুনর্গঠন করতে হবে।
৮) প্রকল্পের আওতাভুক্ত কাজ/ক্রয়সমূহের চুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে আবশ্যিকভাবে মন্ত্রণালয়কে অবহিত করতে হবে।
৯) প্রতিটি প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালকরা সংশ্লিষ্ট প্রকল্প এলাকায় সার্বক্ষণিকভাবে অবস্থান করবেন এবং সংস্থা প্রধানরা বিষয়টি নিশ্চিত করবেন।
১০) সংস্থা প্রধানসহ মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের সিনিয়র কর্মকর্তারা নিয়মিতভাবে প্রকল্প এলাকা আনুষ্ঠানিক/অনানুষ্ঠানিক/ আকস্মিকভাবে পরিদর্শন করবেন এবং চিহ্নিত সুনির্দিষ্ট অনিয়মসহ মন্ত্রণালয়/সংস্থায় প্রতিবেদন প্রেরণ করবেন।
১১) ক্রয়কারী কর্তৃক যোগ্যতাসম্পন্ন সরবরাহকারী বা ঠিকাদারের তালিকা সংরক্ষণ করতে হবে।
১২) প্রকল্প সাইটে সাইট অর্ডার বুকসহ প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজের সকল নথি/ডকুমেন্ট যথাযথভাবে সংরক্ষণ করতে হবে।
১৩) প্রকল্প সাইটের দৃশ্যমান স্থানে প্রকল্পের সমস্ত তথ্য সম্বলিত সাইন বোর্ড স্থাপন করতে হবে। এবং
১৪) প্রকল্পের আওতায় নির্মাণাধীন/নির্মিত/নির্মিতব্য স্থাপনা/অবকাঠামোসমূহের উপকরণসমূহের গুণগত মান উপযুক্ত ল্যাবরেটরি কর্তৃক নিয়মিত পরীক্ষা করতে হবে।