নিজস্ব প্রতিবেদক : না না অব্যবস্থাপনা ও নিয়ন্ত্রনহীন ভাবে চলছে পিরোজপুরের ক্লিনিক ও প্যাথলজিগুলো। নিয়ম নীতির কোন তোয়াক্কা না করেই জেলার ৭টি উপজেলায় ব্যাঙের ছাতার মত গজিয়ে উঠেছে অসংখ্য ক্লিনিক ও প্যাথলজি । নিম্নমানের সেবার কারণে ক্লিনিকগুলোতে মাঝে মধ্যেই ঘটে মৃত্যুর ঘটনা।
উন্নয়নসহ বিভিন্ন দিক দিয়ে পিছিয়ে পড়া দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম জেলা পিরোজপুর। স্বাস্থ্য খাতও এর ব্যতিক্রম নয়। উন্নত চিকিৎসা সেবা বলতে পিরোজপুর সদর হাসপাতালকেই বুঝায়। তবে রোগীর অবস্থা সামান্য জটিল হলেই তাকে উন্নত চিকিৎসার কথা বলে পাঠানো হয় খুলনা কিংবা বরিশালে। এই সুযোগে পিরোজপুরের বিভিন্ন উপজেলায় সর্বনি¤œ সেবা নিয়ে ব্যাঙের ছাতার মত গজিয়ে উঠেছে ক্লিনিক ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টার।
ভূক্তভোগীরা জানায় , সিজারিয়াম অপারেশনের এক মাস পর নারীকে গর্ভবর্তী হিসেবে দেখানো, একই ব্যক্তির একাধিক রক্তের গ্রুপ নির্নয় করাসহ বিভিন্ন শারিরীক পরীক্ষায় রোগীদের ভুল রিপোর্ট দেওয়া এখানকার ডায়াগনষ্টিক সেন্টারগুলোর নিত্য নৈমত্তিক ব্যাপার। আর অধিকাংশ পরীক্ষা নিরীক্ষার কাজগুলো করা হয় হাতুরে টেকনিশিয়ান দিয়ে। তবে বিষয়টি দেখার কেউ নেই।
ক্লিনিকগুলোতে নেই কোন স্থায়ী ডাক্তার কিংবা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নার্স। জনসাধারণকে সরকারি হাসপাতালে স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত করে বেসরকারি হাসপাতালে নামেমাত্র স্বাস্থ্য সেবা দিচ্ছেন এসব ডাক্তাররা।
খোঁজ নিয়ে দেখা গেল, হাসপাতাল চলাকালীন সময়ে বিভিন্ন ক্লিনিকে গিয়ে রোগী দেখা, বিভিন্ন ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে গিয়ে আলট্রাসনোগ্রাফিসহ বিভিন্ন ধরণের পরীক্ষা নিরীক্ষা করা, অধিকাংশ রোগীকে কারণে-অকারণে অনেকগুলো টেষ্ট দেওয়া এবং ঔষদের ব্যবস্থাপত্রে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন এন্টেবায়োটিক ঔষধ লেখাসহ পৃষ্ঠা ভরে ফেলার ঘটনাতো আছেই। এছাড়া অলিখিতভাবে বিভিন্ন প্যাথলজি এবং ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের অংশিদার রয়েছে অনেক ডাক্তারদের।
ক্লিনিক, ডায়াগনষ্টিক সেন্টার ও ডাক্তারদের ব্যাপারে পিরোজপুর স্বাস্থ্য বিভাগ সচেতন রয়েছে বলে দাবি জেলার সিভিল সার্জনের । তবে অফিসের সময় ডাক্তারদের বিভিন্ন ক্লিনিক ও প্যাথলজিতে যাওয়ার জন্য কয়েকজন ডাক্তারকে শোকজও করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে পিরোজপুরের সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ ফারুক আলম পিরোজপুর পোষ্টকে জানান, নি¤œমানের সেবা এবং ভুল চিকিৎসায় মাঝেমধ্যে রোগী মৃত্যুর ঘটনা ঘটলেও, আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে কিংবা প্রভাব খাটিয়ে বিষয়গুলো ধামাচাপা দেওয়া হয়। আর এভাবেই বছরের পর বছর ধরে বেসরকারি স্বাস্থ্য সেবায় প্রতারিত হয়ে আসছে সাধারণ মানুষ। পিরোজপুর স্বাস্থ্য বিভাগের দেয়া তথ্য মতে ১০ বছর আগে জেলায় ৩২টি ক্লিনিক ও ডায়গনষ্টিক সেন্টার থাকলেও বর্তমানে এর সংখ্যা তিন গুণ বেড়ে হয়েছে ৯২ টিরও বেশি।