শুভ রায় : পিরোজপুরে এক কলেজ পড়ুয়া ছাত্রকে থানায় নিয়ে অমানুষিক নির্যাতন করার অভিযোগ উঠছে স্বরুপকাঠী থানা পুলিশের বিরুদ্ধে। পরিবাবের অভিযোগ , তার ছেলের সাথে পাশের আরেক ছেলের ঝগড়ার কারনে তার বাবা পুলিশ দিয়ে এ নির্যাতন করিয়েছে।নির্যাতনের স্বীকার একাদশ শ্রেনীর ছাত্র মোঃ রহমত উল্লা (১৮) স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন। তবে এ অভিযোগ সম্পূর্ন অস্বীকার করেছে পুলিশ।
জানা যায়, জেলার নেছারাবাদ উপজেলার জগতপট্টি এলাকার বাসিন্দা জামাল হাওলাদারের ছেলে রহমত উল্লার সাথে গত বুধবার বাড়ির পাশের মোশারফ এর ছেলের সাথে ঝগড়া হয়। এ সময় রহমত মোশারফের ছেলেকে একটি ঘুসি মারে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মোশারফসহ তার আত্মীয়রা রহমতকে মারধর করে ও পুকুরে ঠেলে ফেলায় ।
জামাল হাওলাদারের স্ত্রী কলেজ ছাত্র রহমত উল্লার মা জানান , মোশারফের ছেলের সাথে ঝগড়া হলে তার ছেলে একটি ঘুসি মারে এটা সত্যি। এর পরে মোশারফ ও তার ভাইয়েরা মিলে তার ছেলে রহমতকে অনেক মারধর করে , এক পর্যায় পুকুরে ফেলে চুবানো ( স্থানীয় শব্দ ) শুরু করে। স্থানীয় আরেকজন এগিয়ে এসে তাদের হাত থেকে সে সময় রহমতকে রক্ষা করে। এরপরে রহমত বাজারে ঔষধ কেনতে গেলে সেখানে মোশারফ থানার এএসআই শাহ-আলিকে সাথে নিয়ে যায়। বাজার থেকে এএসআই শাহ-আলি রহমতকে থানায় নিয়ে যায়।
রহমত উল্লার মায়ের অভিযোগ পুলিশকে টাকা দিয়ে মোশারফ তার ছেলেকে ধরিয়ে নেয়। এরপরে থানায় নিয়ে ওসির রুমে বসে চারজন পুলিশ মিলে প্রথমে বাঁশ ও রাবারের লাঠি দিয়ে তার ছেলেকে পিটিয়ে অধমরা করে। পরে যৌনাঙ্গে কারেন্ট শক দেয়। খবর পেয়ে তিনি থানায় গিয়ে পুলিশ ও মোশারফের হাত পায়ে ধরে তার ছেলেকে ছেড়ে দিতে বলে। কিন্তু পুলিশ তার ছেলেকে থানায় আটকে রেখে পরের দিন স্থানীয় মেম্বারের মধ্যস্থতায় ছেড়ে দেয়। থানা থেকে ছেড়ে দেবার সময় পুলিশ তার ছেলেকে মারধরের কথা কাউকে না বলতে হুমকি দেয়। তিনি আরো বলেন, তার কলেজ পড়ুয়া ছেলের উপার্জনে তাদের সংসার ও তার স্বামীর চিকিৎসা চলে। থানা থেকে ফেরার পর তার ছেলে অসুস্থ হয়ে পরলে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ বিষয়টি জানতে চাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সম্পূর্ন অস্বীকার করে পুলিশের এ .এস. আই. শাহ-আলি বলেন আমি মঠবাড়িয়া ডিউটিতে ছিলাম। আর থানায় কোন মারধর হয় না। মঠবাড়িয়া তো একদিন ডিউটি ছিল, এ ঘটনা তো সেদিনের না জিজ্ঞাসা করলে বলেন, ঠিক মনে পরছে না এ ধরনের ঘটনা।
স্বরুপকাঠি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এস এম তরিকুল ইসলাম জানান, তার রুমে কাউকে মারধর করা বা এ ঘটনের কোন ঘটনা হয়নি। এমনকি রহমত উল্লা নামে কাউকে থানায়ও আনা হয়নি।
এ বিষয়ে পিরোজপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোল্লা আজাদ জানান, এ বিষয় কোন অভিযোগ পাইনি। খোঁজ নিয়ে দেখবো।