পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার শেখমাটিয়া ইউনিয়নের রঘুনাথপুরে জোড়পূর্বক ধর্ষণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেই চিত্রের ভিডিও প্রচারের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ছাত্রীর পরিবারের কাছ থেকে জানা যায়, মেয়েটি পঞ্চম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় এক বছর আগে একই গ্রামের দশম শ্রেণির ছাত্র রিফাত আল-মামুন মেয়েটিকে ধর্ষণ করে তার ভিডিও চিত্র ধারণ করে। এরপর থেকে ওই ভিডিও প্রচারের ভয় দেখিয়ে দীর্ঘ এক বছর ধরে ধর্ষণ করে আসছিল। সম্প্রতি ওই ধর্ষক ও তার বন্ধু বান্ধব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে মেয়েটির ভিডিও চিত্র প্রকাশ করে দেয়। মেয়েটি এঘটনার পর আত্মহত্যার চেষ্টা করে অল্পের জন্য বেঁচে যায়।
নির্যাতিত ছাত্রী জানান, এক বছর আগে রঘুনাথপুর গ্রামের রিফাত আল মামুন তাকে জোড়পূর্বক ধর্ষণ করে এবং সেই ভিডিও চিত্র মোবাইলে ধারণ করে রাখে। পরে তা প্রচারের ভয় দেখিয়ে গত এক বছরে বহুবার তাকে ধর্ষণ করে। গত রোজায় থানায় মামলা দিতে গেলে ধর্ষন মামলা না নিয়ে পুলিশ প্রথমে আইসিটি আইনে স্থানীয় হোমিও চিকিৎসক মোয়াজ্জেমের মোবাইল থেকে ভিডিওটি ফেসবুকে ছড়ানোর অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা নেয়। সেই মামলায় মোয়াজ্জেমকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করে। পরে মোয়াজ্জেম জমিন নিয়ে বেড়িয়ে আসে।
এদিকে ধর্ষক ও তার পরিবার মেয়েটিকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তখন মামলা থেকে রেহাই নিয়ে পরিবারের সকল সদস্যসহ পালিয়ে যায়। ধর্ষক রিফাতের খালা শাহানাজ বেগম পুরো বিষয়টি অস্বীকার করে। এর বেশ কিছুদিন পরে গত ২ জুলাই মঙ্গলবার ধর্ষক রিফাত আল মামুনসহ চার জনকে আসামি করে নাজিরপুর থানায় ধর্ষণ মামলা দেয়া হয়।
এদিকে স্থানীয় এক মানবধিকার কর্মী মুন্নি আক্তার অসহায় ছাত্রীটির পাশে দাঁড়ানোর কারণে তাকেও পড়তে হয় নানা হুমকির মুখে।
নাজিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মুনিরুল ইসলাম মুনির জানান, ধর্ষণের ঘটনায় আইসিটি ও ধর্ষণের পৃথক দুইটি মামলা নেয়া হয়েছে। আসামি রিফাতকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। অসহায় মেয়েটি লোক লজ্জার ভয়ে পারছেনা বাইরে বেরোতে। যত দ্রুত সম্ভব ধর্ষককে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করার দাবি জনিয়েছেন এলাকাবাসী।
মশিউর রাহাত/ পিরোজপুর পোষ্ট