ইন্দুরকানী প্রতিনিধিঃ পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে বাকি চাওয়া নিয়ে এক চায়ের দোকানদারকে মারধরের ঘটনার শালিশ বিচার করা নিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান ও ভাইস-চেয়ারম্যান দুই গ্রুপের উত্তেজনায় চেয়ারম্যান গ্রুপের এক ইউনিয়ন সেচ্ছাসেবক লীগ নেতার উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার জেরে লাঠিসোটা নিয়ে মারমুখি অবস্থানে যাওয়ায় দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার (১৯ জুন) বিকালে উপজেলার চন্ডিপুর হাটে চায়ের দোকানদার হাবিবুর রহমানের কাছে চা খাওয়ার পর সিগারেট বাকি চায়। বাকিতে সিগারেট না দিতে চাইলে এ নিয়ে স্থানীয় যুবলীগ কর্মি শুকুরের মধ্যে বাক বিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে শুকুর চায়ের দোকানদার হাবিবকে মারধর করলে তিনি উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান রুহুল আমীন বাগা সহ স্থানীয় লোকজনদের কাছে নালিশ জানান। পরে এ ব্যাপারে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চন্ডিপুর হাটে বালিপাড়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগ কার্যালয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান এড. এম মতিউর রহমান এবং ভাইচ-চেয়ারম্যান রুহুল আমীন বাগা সহ স্থানীয় আ.লীগ নেতারা শালিশ বিচারে বসেন। এক পর্যায়ে দোকানদার হাবিবের কাছে শুকুরকে ক্ষমা চাইতে বললে তিনি তা না মানায় ভাইচ-চেয়ারম্যান রুহুল বাগা শাসন করার জন্য শুকুরকে একটা থাপ্পর মারেন। এ নিয়ে শুকুরের সাথে তার তর্কাতর্কি হয়। পরে ভাইচ-চেয়ারম্যানকে লাঞ্চিত করা হয় বলে মুহুর্তে গুজব ছড়িয়ে পড়লে তার লোকজন লাঠিসোটা নিয়ে ছাত্রলীগ কার্যালয়ের সামনে জড়ো হয়। এসময় চেয়ারম্যানের লোক বালিপাড়া ইউনিয়ন সেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ন-আহবায়ক কামরুল হাচান ইমন সবাইকে শান্ত হওয়ার কথা বলে দলীয় কার্যালয়ের সাঁটার টানতে গেলে ভাইস-চেয়ারম্যান গ্রুপের জামাতকর্মি শুকুর, মিজান ও ওবায়দুল ইমনকে অফিসের ভিতর ঢুকে মারধর করে। এসময় ভাইস-চেয়ারম্যান গ্রুপের লোকজন দলীয় কার্যালয়ের কিছু মালামাল লুট করে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ করেন ছাত্রলীগ আহবায়ক রাহাত হোসেন গাজী।
এদিকে ঘটনার পর সেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ইমন রাত ৯টার দিকে মটর সাইকেল যোগে বাড়ি থেকে বাজারে আসার পথে চন্ডিপুর হাটের বাসস্ট্যান্ড মোড়ে ভাইস-চেয়ারম্যান রুহুল বাগার ছেলে জাহিদ বাগার নেতৃত্বে আসলাম, রাসেল ফরাজী ও বাহাদুর তাকে মটর সাইকেল থেকে টেনে হিঁচড়ে নামিয়ে রাস্তায় ফেলে এলোপাথারি ভাবে মারধর করে।
এ ঘটনার পর রাতে দুগ্রুপে উত্তেজনা দেখা দিলে চন্ডিপুর হাটে ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতংক দেখা দিলে দোকানপাট বন্ধ করে দেন। পরে রাতে খবর পেয়ে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ ঘটনায় দুগ্রুপের মধ্যে চাপা উত্তেজনা থাকায় পাল্টা পাল্টি সংঘর্ষের আশংকা রয়েছে।
হামলার শিকার সেচ্ছাসেবকলীগ নেতা ইমন জানান, একদম অহেতুক ভাবে ভাইস-চেয়ারম্যান রুহুল আমীন বাগার লোকজন প্রথমে ছাত্রলীগ কার্যালয়ের ভিতর এবং পরে চন্ডিপুর হাটের বাসস্ট্যান্ডে মটর সাইকেল থেকে নামিয়ে এলোপাথারি ভাবে আমাকে মারধর করে ।
বালিপাড়া ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারন সম্পাদক মোস্তফা কামাল বলেন, একটি শালিশ বিচারে কথার কাটা কাটি হওয়ার ঘটনায় সেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ইমনের উপর দুদফা মারধরের ঘটনা ঘটায় একটি গ্রুপ।
ভাইস-চেয়ারম্যান রুহুল আমীন বাগা জানান, শালিশ বিচারে শুকুর আমার সাথে অসৌজন্যমুলক আচারন করায় ছাত্রলীগ কার্যালয়ে বসে উপস্থিত কয়েকজনের মধ্যে হাতাহাতির সৃস্টি হলে ইমনের গায়ে লাগে। এরপর সেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ইমন ক্ষীপ্ত হয়ে রাস্তায় বসে হুমকি দিলে পরে তাকে স্থানীয় লোকজন মারধর করে।
এ ব্যাপারে উপজেলা চেয়ারম্যানকে ফোনে যোগাযোগের চেস্টা করা হলে তিনি রিসিভ না করায় তার কোন মন্তব্য জানা যায়নি।