পিরোজপুর পোস্ট ডেস্কঃ
পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে ইজিবাইক চালকদের কাছ থেকে দৈনিক চাঁদা আদায়ের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে শত শত চালকরা। রোববার সকালে উপজেলা পরিষদের মাঠে উপজেলার সকল ইজি বাইক চালকরা সমবেত হয়ে প্রতিবাদ জানায়। ইন্দুরকানী উপজেলার বিভিন্ন রুটের চালকরা প্রতিবাদে অংশ গ্রহন করেন। ইন্দুরকানী থানার ওসি হাবিবুর রহমান সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করে দেয় এবং তাদের কাছ থেকে আর কোন চাঁদা আদায় করতে দেওয়া হবে না বলে প্রতিশ্রুতি দেয়।
প্রতিবাদকারীরা জানান, প্রায় ১২ বছর ধরে উপজেলা শ্রমীকলীগের আহবায়ক আব্দুল হাকিমের নের্তৃত্বে দৈনিক শত শত গাড়ী থেকে প্রতি ইজিবাইক চালকের কাছ থেকে ৩০টাকা করে এবং মাস শেষে আরো অতিরিক্ত ১ শত টাকা করে দিতে চালকদের। এছাড়া নতুন ইজিবাইক নিয়ে সড়কে নামলে তাদের ভর্তি ফি হিসেবে পাঁচ থেকে দশহাজার টাকা চাঁদা দিতে হয় শ্রমীক নেতাদের। কোন চালক এই শর্ত ভংঙ্গ করলে তাকে গাড়ি চালাতে দেয়া হয় না। এছাড়া সময় মত চাঁদার টাকা না দিলে চালকদেরকে বিভিন্ন ধরনের গালি-গালাজ করে শ্রমিকলীগের নেতারা।
একটি বিশ্বস্থ সূত্রে জানা গেছে, অবৈধ ভাবে প্রতিদিন ইজিবাইক চালকদের কাছ থেকে আদায়কৃত অর্থ চলে যায় ক্ষমতাসীন দলের বিভিন্ন নেতার পকেটে।
ইজিবাইক চালক শাহজাহান জানান, কয়েকদিন পূর্বে আমার বাবা অসুস্থ ছিল বিধায় ঐ দিন চাঁদার টাকা দিতে পারি নাই। টাকা না দেওয়ার কারনে আমি শ্রমীকলীগের নেতাদের হাতে লাঞ্চিত হয়েছি। অভিযোগ সুরে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চালক জানায়, প্রতিমাসে রাতে একবার আমাদের পুলিশের ডিউটি করতে হয়। কিন্তু আমি নির্ধারিত তারিখে অসুস্থ থাকায় ডিউটিতে না যেতে পারায় পরের দিন আমার কাছ থেকে শ্রমীকলীগের নেতারা ৪শত টাকা নিয়েছে এবং আমাকে মারধরও করেছে।
শ্রমীকলীগের আহবায়ক আব্দুল হাকিম মুঠোফোনে জানায়, আমরা আগে চাঁদা নিতাম এখন নেই না। কারণ চালকদের সিরিয়াল রক্ষার জন্য এই চাঁদা নেওয়া হত। আমি, পারভেজ, সেলিম, আ: রশিদ সহ কয়েকজনে এই টাকা আদায় করতাম।
এব্যাপারে ইন্দুরকানী উপজেলা নির্বাহী অফিসার হোসাইন মুহাম্মদ আল-মুজাহিদ জানান, ব্যাপারটি ইজিবাইক চালকদের কাছ থেকে শুনে দু:খ পেলাম। তাদের কাছ থেকে আর কোন চাঁদা আদায় করতে দেওয়া হবে না। যদি এরপর কোন চাঁদা আদায়ের অভিযোগ পাওয়া যায় তাৎক্ষণিক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।