ইন্দুরকানী প্রতিনিধিঃ পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে উপজেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিনা বেগমের দুই পা পিটিয়ে ভাঙ্গার ঘটনায় আদালতের নির্দেশে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সহ ১৪ জনকে আসামী করে মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় এক জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
আজ রোববার মহিলা আওয়ামীলীগ নেত্রীর স্বামী জাহিদ হোসেন বাদী হয়ে পিরোজপুর সিনিয়র চীপ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেডের আদালতে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মৃধা মোঃ মনিরুজ্জামান ও তার ছেলে উপজেলা স্বে”্ছাসেবকলীগ সভাপতি মাহমুদুর রহমান সোহেল,আঃ রশিদ হাওলাদার, আলমগীর হাওলাদার, আলাউদ্দিন হাওলাদার সহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলে আদালত ইন্দুরকানী থানার ওসিকে মামলাটি এজাহার হিসাবে গ্রহনের নির্দেশ দেন।
আদালতের নির্দেশের কপি রোববার দুপুরে ইন্দুরকানী থানায় পৌছলে ইন্দুরকানী থানার ওসি মামলাটি রেকর্ড করে এবং ওই মামলার এজাহারভুক্ত লোকমান ফকির নামে এক আসামীকে গ্রেফতার করে। ।
এদিকে পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে মহিলালীগ নেত্রীর অবস্থার অবনতি তার পায়ের দ্রুত অপারেশন করতে হবে বলে জানান তার স্বামী জাহিদ হোসেন।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার (১২ জুলাই) উপজেলা মহিলালীগ নেত্রী সেলিনা বেগম তার স্বামীকে নিয়ে নিজেদের জমিতে ধানের বীজ রোপন করে বাড়ি ফেরার পথে স্থানীয় প্রতিপক্ষ রশিদ হাওলাদার, আলাউদ্দিন হাওলাদার, আলমগীর হাওলাদার, বাদশা মৃধা, বশির মৃধা, শহিদুল হাওলাদার, নাইম হাওলাদার ও গফ্ফার হাওলাদার সহ কয়েক জন তাদের পথ আগলে দাড়াঁয় এবং তাদের উপরে হামলা চালায়।
এক পর্যায়ে তার স্বামী জাহিদ হোসেন হাওলাদার কে কয়েকজন মিলে টেনে হিচড়ে তার সামনে থেকে নিয়ে যায়। পরে হামলাকারীরা সেলিনা বেগমকে নিয়ে একটি বাড়িতে আটকে লোহার রডে পাটের বস্তা পেচিয়ে পিটিয়ে তার দুই পা ভেঙ্গে ফেলে এবং তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে পিটিয়ে জখম করে। পরে তার স্বামী বিষয়টি ইন্দুরকানী থানা পুলিশ কে জানালে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে পিরোজপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।
এ বিষয়ে ইন্দুরকানী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এ্যাড এম. মতিউর রহমান জানান, সেলিনা আওয়ামী পরিবারের সদস্য। তার উপর হামলার তীব্র প্রতিবাদ জানাই। যারা এ ঘটনার সাথে স¤পৃক্ত তাদের দ্রুত আইনের আওতায় নেয়া হোক। এছাড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মনিরুজ্জামানকে রাজনৈতিক ভাবে হেয় করার জন্য একটি মহল এই মামলায় আসামী করেছে। সে অনেক দিন ধরে ঢাকায় রয়েছে।
উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মনিরুজ্জামান মৃধা জানান, আমি বেশ কিছু দিন ধরে ঢাকায় আছি। আমার ছেলে সোহেল বাড়িতে অসুস্থ। আমরা কেউ এই ঘটনার সাথে আদৌ জড়িত নই। আমাদেরকে রাজনৈতিক ভাবে হেয় করার জন্য একটি মহল মিথ্যা মামলায় জড়িয়েছে। সেলিনার উপরে হামলার খবর পেয়ে আমি ঢাকা থেকে ওসি সাহেবকে ফোন করে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলেছি।
উপজেলা সেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মাহামুদুর রহমান সোহেল জানান, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে স্থানীয় প্রতিপক্ষরা সেলিনা বেগমকে পিটিয়ে আহত করেছে বলে আমি বিভিন্ন মিডিয়ার মাধ্যমে জানতে পেরেছি। আমার পিতা বর্তমানে ঢাকায় রয়েছেন। অথচ অন্য একটি এলাকার মারামারির ঘটনায় আমাদের পিতা পুত্রকে মামলার আসামী করা হয়েছে তা সত্যিই হাস্যকর ব্যাপার। রাজনৈতিক গ্রুপিং এর কারনে দলীয় একটি মহল আমাদেরকে এ মামলায় জড়িয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
ইন্দুরকানী থানার ওসি মো: হাবিবুর রহমান জানান, জমি সংক্রান্ত বিরোধের কারনে মহিলালীগ নেত্রীর পা ভাঙ্গা ঘটনায় ১৪ জনকে আসামী করে মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। এ ঘটনায় এজাহার ভুক্ত একজন আসামী গ্রেফতার করা হয়েছে।