নিজস্ব প্রতিনিধি : সাম্প্রতিক সময়গুলোতে পিরোজপুরে বেড়েছে কিশোর গ্যাং এর পরিধি । অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠা পিরোজপুর জেলাজুড়ে এলাকাভিত্তিক এ কিশোর গ্যাং গ্রুপগুলো । জেলার ৭ উপজেলায় কিশোর গ্যাং এর আধিপত্য রয়েছে ।
সূত্রের খবর, রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে ব্যবহৃত হচ্ছে কিশোররা। সময়ের সাথে সাথে তাদের অপরাধের ধরনও পাল্টে যাচ্ছে। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি, চুরি-ছিনতাই থেকে শুরু করে খুনাখুনিসহ নানা অপরাধে কিশোর-তরুণরা জড়িয়ে পড়ছে। মাদক ব্যবসা ও দখলবাজিতেও তাদের ব্যবহার করা হচ্ছে।
পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, আলাদা করে কিশোর অপরাধীদের জন্য কোনো রকমের ডাটাবেজ নেই। কোনো একটি ঘটনা ঘটলেই পুলিশের অভিযানের মধ্যে কিশোরদের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায় ।
এদিকে অধিকাংশ এসব কিশোর গ্যাং গড়ে ওঠার নেপথ্যে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা মদদ দিচ্ছেন বলে জানা যাচ্ছে। এ ছাড়া ‘হিরোইজম’ প্রকাশ করতেও পাড়া-মহল্লায় কিশোর গ্যাং গড়ে উঠছে। আধিপত্য বিস্তার, সিনিয়র-জুনিয়র দ্বন্দ্ব, প্রেমে বিরোধ, মাদকসহ নানা অপরাধে কিশোররা খুনাখুনিতেও জড়িয়ে পড়ছে।
কিশোর গ্যাংয়ের মাধ্যমে সংঘঠিত একাধিক ঘটনা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বিভিন্ন এলাকায় কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণ করে স্থানীয় ‘বড় ভাই’রা ও রাজনৈতিক নেতারা ।
বিশেষ করে বিভিন্ন স্কুলের ছেলেরা এই ধরনের অপরাধে জড়িয়ে পড়েছে । তাছাড়া অপরাধমুলক বিভিন্ন কান্ডে কিশোরদের জড়িত থাকার বিষয়টি নিয়ে সংবাদে প্রকাশ করা হলে স্থাণীয় গণমাধ্যমকর্মীদের উপর চড়াও হয় তারা । যখন কোন ঘটনা ঘটে ঠিক তখনই এ বিষয় নিয়ে নড়েচড়ে বসে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী ।
২০১৯ সালে পিরোজপুর জেলা পুলিশ এ কারনে ৯২ জনকে আটক করা হয় জেলা জুড়ে । ২০২০-২০২২ সাল জেলা জুড়ে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় ৫০ টি অপরাধমূলক ঘটনার সাথে জড়িত ছিলো কিশোর গ্যাং ।
পুলিশের তরফ থেকে জানানো হচ্ছে , অপরাধের সাথে জড়িত সকল ব্যাক্তিকেই তার অপরাধ অনুযায়ী আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করা হচ্ছে । এ ক্ষেত্রে কাউকে ছাড় দেয়া হচ্ছে না । তাই আলাদা করে কিশোর গ্যাং কালচার ওইভাবে দেখা হচ্ছে না । তবে কিশোর গ্যাং যে নেই তাও বলা যাচ্ছে না ।
হত্যা, সন্ত্রাসী হামলা, চাঁদাবাজি, চুরি ছিনতাইয়ের মতো অনেক অপরাধে জড়াচ্ছে তারা। তাছাড়া স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের উত্ত্যক্ত ও যৌন হয়রানি করছে তারা। গ্রেফতার হলেও আইনের দুর্বলতার কারণে আদালত থেকে তারা দ্রুত ছাড়া পেয়ে যাচ্ছে। জামিনে বেরিয়ে তারা আবারও একি অপরাধে আবারো জড়াচ্ছে।